ব্যাংকগুলো ৯ থেকে ১৩ শতাংশ পর্যন্ত সুদ দিলেও আশানুরূপ হারে বাড়ছে না আমানত। মূল্যস্ফীতি, আয় কমে যাওয়া ও বিনিয়োগে স্থবিরতার কারণে আমানতের প্রবৃদ্ধি চাপের মুখে পড়েছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জুন শেষে ব্যাংক খাতে আমানতের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭.৭৭ শতাংশ, যা মে মাসের তুলনায় অপরিবর্তিত। এপ্রিল ও মার্চ মাসে এই হার ছিল যথাক্রমে ৮.২১ ও ৮.৫১ শতাংশ।
তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ব্যাংকে আমানতের প্রবৃদ্ধি কখনোই দুই অঙ্কে পৌঁছায়নি। জুন পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৭৭ হাজার কোটি টাকা, এক বছর আগে যা ছিল ১৭ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা।
অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকাররা বলছেন, চলমান মূল্যস্ফীতির কারণে অনেকেরই মাস শেষে হাতে সঞ্চয়ের মতো অর্থ থাকছে না। কেউ কেউ আবার আগের সঞ্চয় ভেঙে প্রয়োজন মেটাচ্ছেন।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘মানুষের আয় স্থবির, বেকারত্ব বেড়েছে। নতুন ব্যবসা কমে গেছে, বিনিয়োগেও গতি নেই। ফলে আমানতের প্রবৃদ্ধি কমছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ব্যবসা ভালো চললে চলতি আমানত বাড়ে, আয় বাড়লে বাড়ে স্থায়ী আমানত। এখন যে প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে, তা মূলত রেমিটেন্স প্রবাহের কারণে। সেটি না থাকলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতো।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের জুন মাসে মূলধনি যন্ত্রপাতির আমদানি কমেছে ২৫.৪১ শতাংশ, যা বিনিয়োগ স্থবিরতার স্পষ্ট ইঙ্গিত।
বিশ্লেষকদের মতে, সামগ্রিক অর্থনীতিতে গতি না ফিরলে ব্যাংকে আমানতের প্রবৃদ্ধি আরও চাপে পড়তে পারে। ফলে ভবিষ্যতে ব্যাংক খাতে তারল্য সংকটও দীর্ঘায়িত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।