আগামী দশকে অর্থনীতির চাহিদার সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় কর্মকৌশল নির্ধারণ করতে মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই।
শনিবার বিকেলে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংগঠনটির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবার পর, বাংলাদেশের জন্য অনেক সম্ভাবনা তৈরি হবে। ব্যবসা বাণিজ্য ও রপ্তানি খাতে চাহিদা তৈরি হবে নতুন পণ্যের। অর্থনীতির আকারও বড় হবে। সরকারের নেয়া নানা অবকাঠামো প্রকল্পের বাস্তবায়ন শেষ হলে বিদেশী বিনিয়োগও বাড়বে। তখন পণ্য পরিবহন, বন্দরের সক্ষমতাও বাড়াতে হবে।
জসিম উদ্দিন জানান, এলডিসি পরবর্তী বৈশ্বিক চাহিদা মোকাবিলায় খাতভিত্তিক সক্ষমতা বৃদ্ধি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশীয় শিল্পের সক্ষমতা বাড়াতে একটি ইনোভেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে এফবিসিসিআই। আগামী মাসেই এ সংক্রান্ত ধারণাপত্রটি সরকারের কাছে জমা দেওয়া হবে।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পুন:প্রক্রিয়াজাতকরণ নিয়ে এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে কাজ করছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়। চলমান এ কার্যক্রম শেষ হলে, দেশের বর্জ্য দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও পুণ:প্রক্রিয়াজাতকৃত পণ্যের উৎপাদন বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
সংবাদ সম্মেলেন সাম্প্রতিক যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স সফরের প্রসঙ্গ তুলে ধরে জসিম উদ্দিন জানান, বাংলাদেশী প্রবাসীদের ২য় ও ৩য় প্রজন্ম দেশদুটির মূল অর্থনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত হয়েছে। কিন্তু তাদের বাংলাদেশ সম্পর্কে তেমন ধারণা নেই। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সঙ্গে ঐসব প্রবাসী উদ্যোক্তাদের যুক্ত করতে পারলে, দেশ দুটির মূল বাজার ধরা সহজ হবে। এ লক্ষ্যে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের মূল ধারার বাণিজ্য সংগঠনের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেছে এফবিসিসিআই।
এছাড়া তৈরি পোশাকের বাইরে নতুন নতুন সম্ভাবনাময় পণ্যের তালিকা, সেগুলো রপ্তানির সুযোগ ও প্রতিবন্ধকতা বিষয়ে গবেষণা করতে এইচএসবিসির সঙ্গেও সমঝোতা স্মারক সই করেছে এফবিসিসিআই। এসব কার্যক্রমের ফলে, এলডিসি পরবর্তী সময়ের সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির চাকা আরও বেগবান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে এফিবিসিসিআইয়ের আয়োজনে চলমান ‘বিজয়ের ৫০ বছর: লাল সবুজের মহোৎসব’ এর ওপর অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন আগামী ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৬ দিনব্যাপী কার্যক্রমের বিস্তারিত তুলে ধরেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
এসময় তিনি বলেন, ব্যবসা বাণিজ্য সম্প্রসারণে বিভিন্ন পদক্ষেপের পাশাপাশি, দেশ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও লাখো শহীদের প্রতি ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতাবোধের প্রকাশ হিসেবে স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তীতে মহোৎসব করছে এফবিসিসিআই। তিনি উপস্থিত সবাইকে এ মহোৎসবে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সহসভাপতি এম এ মোমেন, মো. আমিনুল হক শামীম, মো. আমিন হেলালী, মো. সালাহউদ্দিন আহমেদ ও এম. এ রাজ্জাক খান রাজ। এছাড়াও বর্তমান কমিটির পরিচালকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।