মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনা থেকে প্রাণে বাঁচল সায়ের। কিন্তু ট্রমা রয়ে গেছে। আজ বিকেলে তাকে নিয়ে গিয়েছিলাম মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদের কাছে। ডাক্তার কিছু পরামর্শ দিলেন। রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে ডাক্তারের বাসা থেকে ফেরার পথে বাবার কর্মস্থল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো অফিসে এলো সায়ের।
প্রিয় সম্পাদক মতিউর রহমান বুকে জড়িয়ে ধরলেন, এরপর সায়েরকে হাত ধরে ধরে নিয়ে গেলেন প্রথম আলোর বিভিন্ন তলায়। পরিচয় করিয়ে দিলেন সবার সঙ্গে। কবি, সাহিত্যিক ও জ্যেষ্ঠ সহকর্মী আনিসুল হক, সোহরাব হাসান, সুমনা শারমিন, এ কে এম জাকারিয়া, লাজ্জাত এনাব মহসী, শওকত হোসেন মাসুম, কুররাতুল আইন তাহমিনা, শিশির মোড়ল, মানসুরা হোসাইন, নাজনীন আখতার, লিপি রানী সাহা, রিয়াদুল করিমসহ বার্তা কক্ষের বন্ধুদের সবাই জড়িয়ে ধরে অশ্রুসজল হলেন, আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। কারণ "ছেলের খোঁজে রুদ্ধশ্বাস ৪ ঘন্টা' শিরোনামের গল্পের নায়ক সায়ের তাদের সামনে।
আজ বিকেলেই সায়েরের গায়ে জ্বর ওঠে। ঘেমে কিছুটা ক্লান্ত হয়ে পড়ছিল সে। সব তলায় ঘুরে সম্পাদক তাকে নিজ কক্ষে নিয়ে এসে একটু বিশ্রামের ব্যবস্থা করলেন। বিমান দুর্ঘটনার দিন থেকে আমি অফিসে নিয়মিত নই। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম গত সপ্তায়। একের পর এক ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে সেটি যায়নি। ছেলেকে নিয়ে অফিসে এলে জানতে পারি আগামীকাল শুক্রবার সাক্ষাৎকারটি ছাপা হবে। সামান্য সংযুক্তি ছিল। এটি শেষ করে দোতলায় সায়েরকে আনতে গিয়ে শুনি সম্পাদক মতি ভাইয়ের বিছানায় ঘুমাচ্ছে সে। ঘুম থেকে তুলে সায়েরকে নিয়ে বাসায় ফিরব। সম্পাদক বললেন এই শরীরে ও কীভাবে যাবে। যা হোক, ফেরার পথে সম্পাদক সায়েরকে নিয়ে সেই চিরচেনা হাসিতে ছবি তুললেন, অনেকগুলো অমূল্য উপহারও দিলেন। সঙ্গে তার মা এবং বাবার জন্যও।
সায়েরের নতুন জীবন পাওয়া, ট্রমা কাটাতে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং বাবার কর্মস্থল প্রথম আলোতে তার প্রথম আগমন, সম্পাদক থেকে শুরু করে তলায় তলায় বড় বড় সব খ্যাতিমান সহকর্মী থেকে অভ্যর্থনা কর্মী পর্যন্ত সবার আদর-ভালোবাসাগুলো বড় স্মৃতি হয়ে থাকবে।
এখানেই কী শেষ? না। বাসায় ফেরার ঘন্টা দুই পর সম্পাদক ফোন দিলেন ঠিকমতো ফিরেছি কিনা। এরপর সায়েরের মা'র সঙ্গে কথা বললেন, তার শরীর-স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নিলেন।