রাজধানীর বৃহত্তম প্রবেশপথ যাত্রাবাড়ী থানার সড়কগুলোর বেহাল দশা। এগুলোতে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে, যা যানজট ও জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৃষ্টি হলে সমস্যাটি প্রকট আকার ধারণ করে। রাস্তা আরও পিচ্ছিল ও বিপজ্জনক হয়ে যায়। এই বেহাল দশার কারণে মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে যারা অফিসগামী, যাত্রী বা রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে চান, তাদের অনেক বেশি ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
একই অবস্থা কদমতলী ও ডেমরা থানার। এ সকল সমস্যার যথাযথ সমাধান না হওয়ায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ৬১ থেকে ৭০ নং ওয়ার্ডের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা স্থিমিত হয়ে পড়েছে। রাস্তাঘাটের বেহাল দশা, জরাজীর্ণ ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা কারণে বর্ষা মৌসুমে একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। পয়ঃনিষ্কাশনের যথাযথ ব্যবস্থাপনা না থাকায় প্রায় ৪ লাখ মানুষকে নিয়মিত ভোগান্তি পোহাতেই হচ্ছে।
শামসুল হক খান স্কুল এন্ড কলেজ, ডঃ মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ, রোকেয়া আহসান কলেজ, মান্নান স্কুল এন্ড কলেজ, জামিয়াতুল আবরার মাদ্রাসা,মাতুয়াইল মহিলা মাদ্রাসাসহ প্রায় ৫০টির মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে এই এলাকায়। রাস্তাঘাটের বেহাল দশার কারণে হাজার হাজার শিক্ষার্থী প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছে। প্রতিদিন রাস্তায় কোন না কোন দুর্ঘটনা ঘটছে।
বেহাল সড়কের পাশাপাশি অপরিকল্পিত নগরায়নের কারণে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা দূর্বিষহ হয়ে উঠেছে। রায়েরবাগ, গ্যাস রোড,আদর্শবাদ, কদমতলা চৌরাস্তা, বাদশা মিয়া রোড,মাতুয়াইল নিউ টাউন, ফার্মের মোড়, কোনাপাড়া, স্ট্যাফ কোয়ার্টার সহ আশপাশের এলাকায় বছরের পর বছর ধরে চলছে অপরিকল্পিত নগরায়ন। বহুতল ভবন, শপিং সেন্টার কোন প্রকার নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই গড়ে উঠছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নির্মাণসামগ্রী মূল রাস্তার ওপরে রাখায় মানুষকে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
ড্রেনের ময়লা আবর্জনা পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকেও কোন নজর নেই ডিএসসিসির। ময়লা থেকে জন্ম নেওয়া মশার কামড়ে প্রতিনিয়ত এই এলাকার মানুষ ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়াসহ বিভিন্ন মশা বাহিত ও পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েই থাকে। এখানকার প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ ধোয়া,ধুলোবালির কারনে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। ভারসাম্যহীন পরিবেশের মরণগ্রাসে দিনাতিপাত করছে কদমতলী, ডেমরা ও যাত্রীবাড়ির জনগণ।
কোনাপাড়ার একটি ক্লিনিকে শিশু কন্যাকে চিকিৎসা দিতে এসেছেন রফিকুল ইসলাম দম্পতি। তারা ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, ‘ময়লা-আবর্জনা পরিস্কার নিয়ে তারা কেন কথা বলবে! এটাতো তাদেরই লাভ! যত বেশি মানুষ অসুস্থ হবে, ততোই তাদের ব্যবসা প্রসারিত হবে।’
জানতে চাইলে ডিএসসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জাগো কণ্ঠকে বলেন, ‘এলাকাগুলোর বিরাজমান সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা কাজ করছি। আর ময়লা-আবর্জনা থেকে এলাকা পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য কঠোর নির্দেশনা আছে। কেউ দায়িত্বে অবহেলা করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’