শিবগঞ্জে এখন বারো মাস পাওযা যাচ্ছে আম। নতুন করে মুকুলও এসেছে গাছে। সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখ গেছে, এখনো সারি সারি গাছে থোকা থোকা আম ঝুলে আছে। আমকে রক্ষা করতে শ্রমিকরা কাজ করছে। পরামর্শ দিচ্ছে উপসহকারী কৃষি অফিসারগণ। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে শিবগঞ্জ উপজেলায় ১০ হেক্টর জমিতে কাটিমন আম আছে। সরেজমিনে শিবগঞ্জ পৌর সভার সেরাফত মৌজার মরদানা মাঠে আম চাষী এনামুল হকের আম বাগানে প্রায় তিন‘শো মণ কাটিমন আমে গাছে ঝুলছে। শ্রমিকরা কাজ করছে।
তিনি জানান, ১৯৯৫ এসএসসি পাস করে ম্যালেশিয়া গিয়ে পাঁচ বছর পর ফিরে মোকারম হোসেনের কাছে ও গুমাধ্যমে কাটিমন আমের চাষে সফলতার গল্প শুনে ২০১৬ সালে থাইল্যান্ড থেকে ৯০টাকা দরে ছয় হাজার ডোগা সংগ্রহ করে দেশীয় আমার নিজস্ব ছয় বিঘা আম বাগানে কাটিমন প্রজাতির আম টেপওযার্কিং করি। পরের বছর ১৫মণ কাটিমন আম ছয় ‘শো টাকা কেজি দরে বিক্রি করি।। প্রথম বছর খরচের অর্ধেক টাকা পেয়েছিলাম। ২০২০ সেরাফত মৌজার মরদানা মাঠে বাৎসরিক ১৫ হাজার টাকা দরে ১১ বছরের জন্য ৩০বিঘা বর্গা নিয়ে ২৫০টি দেশীয় জাতের আম গাছে প্রায প্রতিটি ১৫টাকা দরে তিন লাখ কাটিমন আগের ক্রয় করে টপওযার্কিং করে দেশীয় আমকে কানিমন আমে রুপান্তরিত করি। ২০২১সালেই ওই ২৫০টি গাছ থেকে প্রায় ২৭ লাখ টাকার কাটিমণ আম বিক্রি করি। পরে এ ৩০বিঘা জমিতে আরো তিন হাজার কাটিমন আমের চারা লাগিয়েছি। সেগুলো থেকে কিছু কিছু আম পাচ্ছি। ২০২২ সালে আমার তিনটি কানিমন আম বাগান থেকে প্রায় ৫০লাখ টাকার আম বিক্রি করেছি। এ বছর শুধু এ বাগান থেকেই প্রায় ৪০লাখ টাকার কাটিমন আম বিক্রি করেছি এবং আরো ২০ লাখ টাকা আম এখনো আছে। যা আরো এক মাস থাকবে। অন্য দুই বাগান থেকে প্রায় ২০লাখ টাকা আম বিক্রি করেছি। বর্তমানে আমের দর কম। প্রায় পাঁচ ‘শো টাকা কেজি। তাছাড়া নতুন করে গাছে মুকুল এসেছে। খরচ হয়েছে প্রায ৩০লাখ টাকা। খরচ বাদে আমার লাভ থাকবে প্রায ৫০লাখ টাকা। এ আম শেষ হওয়ার পর পরই আবারো নতুন আমের মেরামত করতে হবে।
তিনি বলেন, সব মিলিয়ে আমার ৫০ বিঘা কাটিমন আমের বাগানে দৈনিক সাড়ে তিন ‘শো টাকা হারে একজন প্রতিবন্ধী সহ ৫০জন লোক কাজ করে। তিনি আরো জানান ৫৫/৬০ কেজিতে মণ, টোল আদায়ে অনিয়ম, যানজট,রাস্তায় নিরাপত্তার অভাব, বিদ্যুৎ বিভাগ কৃষি মিটার না দেয়ায়নহ নানা সমস্যায় আমরা জর্জরিত।শিবগঞ্জের ইসমাইল হোসেন শামীম খাঁন, আওয়াল, শহিদুল ইসলাম,বাবুল অনেকের প্রায় ৭৫ বিঘা জমিতে এখনো কাটিমন আম আছে বলে কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে। তবে আয়কর ফাঁকি দিতে অনেকেই আম বাগান থেকে আয়ের ব্যাপারে মুখ খুলতে নারাজ।
এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শরিফুল ইসলাম জানান, দেশীয় জাতের আমের চেয়ে কাটিমনসহ বিভিন্ন নতুন প্রজাতির আম চাষে চাষীরা অধিক লাভ হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আমরা কৃষককে সচেতন করতে সফল হয়েছি। আশা করি বেকারত্ব ঘুচাতে শিবগঞ্জে অল্প সময়ের মাধ্যে যুবকেরা আম সহ কৃষি কাজ করবে। ফলে শিবগঞ্জে কৃষি বিল্পব ঘটবে।তাছাড়া শিবগঞ্জে এখন বারো মাসই আম পাওয়া যাবে।