দীর্ঘদিন যাবত তীব্র জনবল সংকটের মাধ্যমে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে চলছে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। কর্মরত চিকিৎসক ও কর্মচারীদের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের সেবার কাজ চললেও অনেক সময় বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেবা থেকে সেবা নিতে আসা জনগণ। শিবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে বিভিন্ন বিভাগে ও১৫টি ইউনিয়নে উপস্বাস্থ্য কে্েন্দ্র মেডিকেল অফিসার, আবাসিক মেডিকেল অফিসার,ডেন্টাল মেডিকেল অফিসার ও সহকারী সার্জন মিলে শিবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধিনে মোট ৩৬জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও বর্তমানে কমর্ রত আছেন ১২জন এবং চিকিৎসক সহ কর্মচারী- কর্মকর্তা মিলে প্রায় ৭১টি পপে শুন্য রযেছে। তার মধ্যে রয়েছে আট জনের চিকিৎসকেরপদ।
সূত্র মতে চক্ষু, অর্থপেডিক্স, পেডিয়াট্রিক্স, এনেসথেসিয়া, মেডিকেলঅফিসার (আবাসিক)প্যাথলজিস্ট,এনেসথেসিওলজিস্ট ,সহকারী সার্জন, মেডিকেল অফিসার (এমও ) পদে শুন্য রয়েছে। অন্যদিকে কর্মচারীদের মধ্যে স্বাস্থ্য পরিদর্শক পদে ৩জন, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক পদে ২জন,স্বাস্থ্য সহকারী পদে ২৭জন, কম্পাউন্ডার পদে ১, কার্ডিও গ্রাফার পদে ১, জুনিয়ার মেকানিক পদে ১জন,ল্যাব এটেনডেন্ট পদে ১, ওটি বয় পদে ১, ইমারজেন্সি এনটেনডেন্ট পদে ১, এম এল এল এস পদে দুইজন, ওয়ার্ড বয় পদে ৩জন সুইপার পদে ২জন নিরাপত্তা প্রহরী পদে ২জন।
অন্যদিকে ১৫টি ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে রয়েছে ব্যাপক জনবল সংকট। এ ১৫টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মধ্যে মেডিকেল অফিসার পদে ৩জন,স্যাকমো-১১ পদে ৩জন এম এল এল এস পদে ৬ জন,ফার্মাস্টি-১১ পদে ২জন ও সহকারী সার্জন পদে ২জন করে দীর্ঘদিন যাবত শুন্য রয়েছে। শিবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরিবার পরিকল্পনা চত্বওে সরজমিনে গিয়ে দেখা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরিবার পরিকল্পনা চত্বর জুড়ে দালাদের দৌরাত্ব। দালালরা প্রতিটা রোগীকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করছে। রোগী ধরে দালালরা বিভিন্ন ক্লিনিকে নিয়ে যাচ্ছে। উল্লেখ্য যে প্রতি দালাল কিøনিকের সাথে রোগী প্রতি চুক্তি করে এবং সন্ধ্যার সময় হিসাব নিকাশ করে টাকা লেন দেন করে থাকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন রোগী জানান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রবেশের সময় দালালরা নানা ও সাধারণ সাধারণ রোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে চিকিৎসক থাকলেও নেই বলে ক্লিনিকে নিয়ে যাবার চেষ্টা করে এবং কাউকে কাউকে নিযে যাচ্ছে।
সূত্র মতে, এ ধরনের প্রায় ৩০জন দালাল রয়েছে। আবার রোগী বুঝে বলে যে এখানে ভাল চিকিৎসা হবে না উমুক ক্লিনিকে যাও ভাল চিকিৎসক আছে। আবার কোন কোন রোগীর অভিযোগ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও চিকিৎসকরা চিকিৎসা করলে ঔষধ দেয় না। বাহির থেকে ঔষধ কিনতে হচ্ছে। তাদের অভিযোগ ঔষধ থাকলে তারা দেয় না। গোপন সূত্রে জানা গেছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারী ্ঔষধ বাহিরের দোকানে বিক্রী হচ্ছে। যার প্রমান কৌশলে দোকানে গিয়ে ঔষধ কিনে পাওযা গেছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মধ্যে বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধিরা দাঁড়িয়ে আছে এবং ব্যবস্থা পত্রের ছবি তুলছে। এমনকি দায়িত্বরত চিকিৎসকদের রুমে গিয়ে আলোচনা করছে এবং বিভিন্ন ধরনের উপঢৌকন দিচ্ছেন।সূত্র মতে সন্ধ্যার পর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিতরে মাদকাসক্ত ও বোকাটেদের আড্ডা মরছে।ফলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিতরে আবর্জনা পড়ে থাকছে।
অন্যদিকে সরজমিনে ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কমিনিটি ক্লিনিকগুলিতে ঘুরে দেখা গেছে ও নাম প্রকাশ না করা সর্তে রোগীরা ও স্থানীয়রা জানান দায়িত্বরত কোন কর্মকর্তাই সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে না। তারা শুধু ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা নিয়ে ব্যস্ত ও কমিনিটি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঔষধ ঠিক মত বিতরণ না করার অভিযোগ রোগীগের। রোগীদেও অভিযোগ। শিবগঞ্জ স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার সায়েরা খান সরকারী ঔষধ বাইরে বিক্রি হওয়া কোম্পানীর প্রতিনিধিদের ভীড় করা ও মাদকাসক্ত ও বখাটেদের আড্ডা এসমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করলেও জনবল সংকট,দালালদের দৌরাত্বে কথা স্বীকার করে বলেন আমরা জনবল সংকটের ব্যাপারে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে আশা করি খুব শীঘ্রই শুন্য পদগুলি পূরণ হবে। দালালদের দৌরাত্ত কমানোর জন্য সাম্প্রতিক কালে উপজেলার প্রতিটি ক্লিনিককে, উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ও সংশ্লিষ্ট কর্তকর্তাদেরকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোন প্রতিকার হচ্ছে না। তবে দালাল প্রতিরোধ অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। তিনি আরো জানান জনবল সংকট থাকলেও আমাদের সেবার মান দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্যাপক হারে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। তবে রোগীর অনুপাতে ঔষধ বরাদ্দ বেশী হওয়া প্রয়োজন।
তিনি বলেন, হিসাব অনুযায়ী ২০২৩সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত বর্হিবিভাগে ৯৩,৫৮৩জন জরুরি বিভাগে ১০৭৩০জন ও ভর্তি ৮২৫৭জন, ২০২২সালে বর্হিবিভাগে ৮৯১৩৫জন,জরুরি বিভাগে ৭৯০৯জন ও ভর্তি ৭১৪৪জন, ২০২১সালে বর্হিবিভাগে ৭০৭৭৯জন জরুরি বিভাগে ৭৮১৫জন ও ভর্তি ৫৪৯৭জন। ২০২০ সালে বর্হিবিভাগে ৫০১৫৪জন, জরুরি বিভাগে ৪৬৭৫জন ও ভর্তি ৫৩৩০জন। ২০১৯সালে বর্হিবিভাগে রোগীর ৭২৪৬৮জন জরুরি বিভাগে ৩২৪৭জন ও ভর্তি ৮৮২৭জন রোগীর সেবা দেয়া হয়েছে। বর্তমানে রোগী সংখ্যা আরো বাড়ছে। তবে রোগী চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে।