চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির (গভর্নিং বডি) অনুমোদন ছাড়াই গোপনে তড়িঘড়ি করে অধ্যক্ষ সহ চার পদে নিয়োগ চেষ্টার ও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকার অভিযোগ উঠেছে।
সরজমিনে মঙ্গলবার সকালে গভর্নিং বডির দুই জন অভিভাবক সদস্য নাম না প্রকাশের শর্তে জানান, নিয়ম অনুসারে এনটিআরসি বহিভূর্ত নিয়োগ গুলোতে গর্ভনিং বডির সভার মাধ্যমে প্রস্তাবণা উত্থাপনের পর তা গৃহীত হলে সে মোতাবেক রেজুলেশন করার পর পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে হবে। কিন্তু চাতরা ইসলামিক কালচারাল ইনষ্টিটিউটে কমিটির সভা ও রেজুলেশন ছাড়াই গত ৮ ফেব্রুয়ারী একটি জাতীয় ও একটি স্থানীয় পেপারে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে শূণ্য পদে যথাক্রমে একজন করে অধ্যক্ষ, একজন অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী, একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী এবং সৃষ্ট পদে একজন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটর অপারেটর।
চককীর্ত্তি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হাসান আনু’র দাবী অধ্যক্ষ সহ ৪ টি নিয়োগের ক্ষেত্রে মোটা অংকের টাকার বাণিজ্যের চেষ্টা চলছিল।
সুশাসনের জন্য নাগরিক চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন জুয়েল জানান, শুধু চাতরা মাদ্রাসায় নয়, জেলার অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্বচ্ছতার সাথে নিয়োগ না হয়ে এক একটি পদের জন্য লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন নিয়োগ হচ্ছে।এতে যোগ্য প্রার্থীরা বাদ পড়ে এবং অযোগ্যরা চাকুরিতে প্রবেশ করে ওইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে।
এদিকে, চাতরা ইসলামিক কালচারাল ইনষ্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা. আব্দুস শুকুর বলেন, আমাকে সভাপতি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পত্রিকায় দিতে বলেছিলেন, তাই দিয়েছি। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগে রেজুলেশন লিখতে বা মিটিং করতে হয় তা আমার জানা ছিলো না। আমার অজ্ঞতার জন্য এই ঘটনাটি ঘটেছে।
এব্যাপারে গভর্নিং বডির সভাপতি হারুন অর রশিদ পাভেল মিঞা বলেন, আমাদের আগের বিজ্ঞপ্তি করা ছিলো। ইতিমধ্যে আমাদের অফিস সহকারী অবসরে গেছেন। আমরা গত ৭ ফেব্রুয়ারি শিক্ষক প্রতিনিধিসহ কমিটির অধিকাংশ সদস্য মিটিং করেছিলাম। সে মিটিং সিদ্ধান্ত হয় আমাদের অফিস সহকারী পদে নিয়োগ দেয়া জরুরি। তাই অধ্যক্ষকে বললাম পূর্ণনিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দিতে। আগের রেজুলেশন অনুযায়ী করেছি।’আপনার যা ইচ্ছে তাই করেন।’
বিনোদপুর আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো: উমর ফারুক মাদ্রাসার জনবল কাঠোমোর আলোকে জানান, গর্ভনিং বডির অনুমোদনের পর একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ পেলে ৬ মাসের মধ্যে নিয়োগ সম্পন্ন করতে হবে।না পারলে আবার সভার মাধ্যমে রেজুলেশন করে পুনরায় নিয়োহ বিজ্ঞপ্তি দেয়া যাবে। রেজুলেশন ছাড়া কোন ভাবেই পুনরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া যাবেনা।
এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জয়নাল আবেদিন জানান, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থানীয় রাজনীতির কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সঠিক নিয়মে চলছে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে রাষ্ট্রপতির পরে গভর্ণিং বডির সভাপতি কে বিশেষ ক্ষমতায় দেওয়ায় তাঁরা নিজের ইচ্ছেমতো কাজ করছে।
রেজুলেশন ছাড়া বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার কোন নীতিমালা নাই। যদি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রেজুলেশন ছাড়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে থাকে সেক্ষেত্রে কেউ যদি অভিযোগ করেন আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।