চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ছাত্রীর শ্লীলতাহানী ভুক্তভোগী পরিবারকে বাধ্য করে স্বাক্ষর নিয়েছেন শিবগঞ্জ থানার এসআই খোকন চন্দ্র ভৌমিক বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ছাত্রীর পিতা। বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১১টায় উপজেলার চককীর্ত্তি ইউনিয়নের চকনাধড়া গ্রামে নিজ মেয়ে শ্লীলতাহানীর পর থেকে অসুস্থ হওয়া হিন্দু সম্প্রদায়ী রাজ কুমার কর্মকর্তা বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় তাঁর ঘাড় ধরে বিছানা থেকে তুলে জোরপূবর্ক স্বাক্ষর করে নেন এই পুলিশের এসআই। তবে, এসআই খোকন চন্দ্র ভৌমিকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এবিষয়ে ওসি স্যারের সাথে কথা বলেন। আমরা কিছু বলার নাই।এদিকে, চককীর্তি হাই স্কুল এন্ড কলেজের ল্যাব সহকারী মো. বাইজিদ আলীর কর্তৃক শ্লীলতাহানী শিকার নবম শ্রেণীর ছাত্রী নিজেই বাদী হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেন গত ১৮ মার্চ। পরবর্তীতে গত ২৩ মার্চ ছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে শিবগঞ্জ থানায় অভিযোগ করলে থানা পুলিশ তাঁর পক্ষে আইনী ব্যবস্থা না নিয়ে মোটা অঙ্কে অর্থের বিনিময়ে অভিযোগকারীকে অভিযোগ তুলে নিতে এবং আর কোথাও কোনো অভিযোগ না করতে বাধ্য করে অপর একটি আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করে নেন বলে অভিযোগ করেন রাজ কুমার কর্মকার।
এব্যাপারে শিবগঞ্জ থানার এসআই খোকন চন্দ্র ভৌমিকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এবিষয়ে ওসি স্যারের সাথে কথা বলেন। আমার কিছু বলার নাই।এব্যাপারে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সাজ্জাদ হোসেনের বক্তব্য ভিন্ন ধরনের। তিনি গত বুধবার দুপুরে বললেন, আমাদের কাছে কোন অভিযোগ বা এজাহার না আসায় আমাদের কিছু করার নেই। আবার তিনিই বুধবার রাত ১১টার দিকে বলেন, তারা একটি অভিযোগ দিয়েছিল, কিন্তু পরে স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য আবেদন করেছেন।
এসময় তিনি আরো বলেন, তদন্তকারী অফিসার যে কোন সময় ভুক্তভোগীর কাছে যেতে পারেন। আবার বৃহস্পতিবার বিকেলে ৩টার দিকে তিনি বলেন, ভুক্তভোগী যে কোন সময় এজাহার দিলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো। আমরা সব সময় অসহায় ও ভুক্তভোগীদের পাশে আছি। উল্লেখ্য, ভুক্তভোগীর স্বাক্ষারিত গত ১৮মার্চ শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন ও গত ২৩মার্চ ভুক্তভোগীর পিতার স্বাক্ষরিত শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, চককীর্তি ইউনিয়নের দ্বিতীয় চককীর্তি গ্রামের শামীম আলীর ছেলে ও চককীর্তি হাই স্কুল এন্ড কলেজের রসায়ন বিভাগের ল্যাব এ্যাসিস্ট্যান্ট বাইজিদ আলী একই প্রতিষ্ঠানের নবম শ্রেণীর এক হিন্দু ছাত্রীর সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং কৌশলে কয়েক স্থানে নিয়ে গিয়ে তার শ্লীলতাহানী ঘটিয়ে গোপনে ভিডিও ধারণ করে রাখে। সাম্প্রতিককালে ভুক্তভোগী ছাত্রীর বিয়ের দিনধার্য হলে বাইজিদ আলী গত ১৬মার্চ বরপক্ষের বাড়ি গিয়ে এ অশ্লীল ভিডিওচিত্র দেখিয়ে বিয়ে ভাঙ্গিয়ে দেয়। শুধু তাই নয়, ভুক্তভোগী পরিবারকে এ বলে হুমকী দেয় এব্যাপারে কোন মামলা ও জানা-জানি করলে তোদের খবর আছে। কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে, অত্র ইউনিয়নের একটি প্রভাবশালী মহল ঘটনাটিকে ধামাচামা দিতে তৎপর রয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১১টায় ভুক্তভোগী পরিবারকে বাধ্য করে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করে নেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।