চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ পর্যায়ে কয়েকজন জনপ্রতিনিধি ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থেকে নিরাপত্তাজনিত কারণে আত্মগোপনে থাকায় জনসেবা কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছেন জনসেবা স্বাভাবিক রয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদেও চেয়ারম্যান ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কয়েকজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানান, চেয়ারম্যানরা নিরাপদ অবস্থানে আছেন।
সুত্রে মতে গত ৫ সাবেক প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগের পর থেকে আত্মগোপনে আছেন শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম নয়ন খান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শিউলী বেগম ও শিবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র সৈয়দ মনিরুল ইসলাম। এছাড়া আত্মগোপনে আছেন, দাইপুখুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আলোমগীর রেজা,চককীর্তি ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন আনু মিঞা, ঘোড়াপাখিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মামুন অর রশিদ, নয়ালাভাঙা ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাকুল ইসলাম পিন্টু, ছত্রাজিতপুর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম রাব্বানী ছবি ও উজিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান দুরুল হোদা।উপজেলা পরিষদের অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক সেলিম রেজা বলেন,শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর চেয়াম্যানের বাড়িতে ও জিকে ফাউন্ডেশন হামলা,ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে দূবৃত্তরা। এরপর থেকে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আত্মগোপনে আছেন। উপজেলা পরিষদে আসেন না। জরুরি সেবামূলক কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
নয়ালাভাঙা ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আকবর হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর থেকে চেয়ারম্যান আত্মগোপনে থাকলেও জনসেবা অব্যাহত রয়েছে।শিবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র গত ৫ আগস্টের আগে থেকেই আত্মগোপনে আছেন। তার বাড়িতে হামলা,ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। একই সঙ্গে ভাঙচুর করা হয় পৌরসভার কয়েকটি গাড়ি। তবে পৌরসভার জরুরি সেবামূলক কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে অফিস সূত্রে জানা গেছে।ছত্রাজিতপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইকবাল আব্বাসী বলেন, ৫ আগস্টের পর চেয়ারম্যান পরিষদে আসেননি। আমরা সেবামূলক কাজে কোন ব্যাঘাত ঘটেনি।দাইপুখুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবদুল লতিফ বলেন, শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর চেয়ারম্যানের বাড়ি-গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। এরপর থেকেই চেয়ারম্যান আত্মগোপনে আছেন। পরিষদে আসেন না।
অন্যদিকে মনাকষা ইউপি চেয়ারম্যান মির্জা শাহাদাত হোসেন, বিনোদপুর ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ রুহুল আমিন,শাহাবাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান নিজামুল হক রানার সাথে ফোনে আলাপ করে জানা গেছে তারা নিয়মিত কর্মস্থলে উপস্থিত হয়ে যাবতীয় কার্যক্রম স্বাভাবিক রেখেছেন। তবে সতর্ক অবস্থায় আছেন। সবার ভিতরে একটা আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শিউলী বেগম বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বলেছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে অফিসে আসবো ইনশাল্লাহ।
তবে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো: সাজ্জাদ হোসেন জানান কোন জনপ্রতিনিধি নিরাপত্তাহীনতার কথা আমাদের জানাননি। তবে কেউ জানালে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আফতাবুজ্জামান আল ইমরান বলেন, পরিস্থিতির কারনে কয়েকটি ইউনিয়নেচেয়ারম্যান উপস্থিত হচ্ছে না। তবে কযেকটি ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যানগণ যথারীতি কর্মস্থলে উপস্থিত হয়ে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। কোন ইউনিয়ন পরিষদেই জনসেবা ব্যাহত হয়নি। স্বাভাবিক কার্যক্রম চালানোর জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এখনো উপস্থিত হননি। তবে আমি ভারপ্রাপ্ত হিসাবে দায়িত্ব অতিরিক্ত পালন করছি। উপজেলা পরিষদের তাদের অনুপস্থিতির কারণে জনসেবা বিঘ্নিত হয়নি। নিরাপত্তাহীনতার কথা এখনো কেউ কিছু বলেননি। তবে বললে আইনশৃংখলা বাহিনীর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।