ভোলার চরফ্যাশনের ভূয়া সাংবাদিক খন্দকার জাফর আহমেদ নোমান ওরফে সাওকির চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ এলাকার মানুষ। মিথ্যা মামলা ও চাঁদাবাজিতে তার দোসর ভাগিনারাও। তাদের মিথ্যা মামলা ও চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। একই সঙ্গে তাদের হয়রানি থেকে প্রতিকার পাওয়ার আশা ইউএনওকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
স্মারকলিপির বিবরণে জানা যায়, চরফ্যাশন উপজেলার ওসমানগঞ্জ ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের খেটে খাওয়া মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে মিথ্যা মামলা ও চাঁদাবাজি চালিয়ে আসছে ভূয়া সাংবাদিক নোমান। তার দোসর হিসেবে রয়েছে তারই বোন বিবি আছিয়া দুই মাদকাসক্ত ছেলে শরীফ ও আসিফ। গত ১৬ বছর ধরে উপজেলার মানুষদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি ও চাঁদাবাজির মচ্ছব চালিয়ে আসছে তারা।
সম্প্রতি ওসমানগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের ৪ ওয়ার্ডের একটি জমিতে চাঁদা দাবি করে নোমান। চাঁদা না পেয়ে চরফ্যাশন থেকে সন্ত্রাসী এনে নেওয়া সিদ্দিক আহমেদ লিটন নামে একজন ব্যাক্তিকে ব্যাপক মারধর করে তারা। একপর্যায়ে লিটন মৃত ভেবে ফেলে রেখে যায়। গুরুতর আহত লিটনকে স্থানীয়রা মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করে।
নোমানের অপরাধের তালিকায় শুধু লিটন নয়, বহু নিরাপদ মানুষ রয়েছে। পাংগাসিয়া কেরামতিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক আলী আহমদ পাটোয়ারীর তাদের মধ্যে অন্যতম। চাঁদা না দেওয়ায় তার নামে উল্টো চাঁদাবাজির একাধিক মামলা দেওয়া হয়েছে। ভূয়া সাংবাদিক নোমানের বোন বিবি আছিয়াকে বাদী করে ভোলা জজ কোর্টে একটি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। সেই মামলাও এলাকার নিরীহ ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার নাম্বার ৩৬৭/২০২৫।
এছাড়া ওসমানগঞ্জ ইউনিয়নের সাধারণ ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন থেকেও দুই লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন ভূয়া সাংবাদিক নোমান। ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন চাঁদা না দেওয়ায় তাকেও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়। সাংবাদিকতাকে পুঁজি করে তিনি প্রায় সময় প্রশাসনের এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নাম ভাঙ্গিয়ে গ্রামের সহজ সরল মানুষ থেকে বিভিন্ন কায়দায় টাকা আদায় করছেন। বিগত আওয়ামী সরকারের আমলেও তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রীদের সাথে ছবি দেখিয়ে চাঁদাবাজি করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
ভূয়া সাংবাদিক নোমানের হাত থেকে তার অসুস্থ বাবাও রেহাই পায়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। আগ্রাসী চাঁদাবাজ নোমানের হাত থেকে আকুতি মিনতি করেও সাধারণ মানুষ রেহাই পাচ্ছে না। গত ১৬ বছরে সাংবাদিক নোমান বিভিন্ন মন্ত্রী-এমপির নাম ভাঙ্গিয়ে র্অনেকের জমি দখল করেছে। জালিয়াতির মাধ্যমে জমির দলিল করে নিয়েছে। এমনকি আপন ভাইবোনদেরকেও ঠকিয়েছে নোমান। অসুস্থ বাবার কাছ থেকে জোরপূর্বক দলিল লিখে নিয়েছে সে। সাধারণ মানুষদেরও হয়রানির শেষ নেই।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে কথিত ভূয়া সাংবাদিক খন্দকার জাফর আহমেদ নোমানের ব্যক্তিগত মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।