পাকিস্তানের চারে চার। জয়রথ ছুটছেই বাবর আজমের দলের। ভারত, নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তানের পর নামিবিয়াকেও সহজে ৪৫ রানে হারিয়েছে পাকিস্তান। আর বিশাল এ জয়ে সবার আগে সেমিফাইনালও নিশ্চিত করেছে তারা। টানা চার ম্যাচ জেতা পাকিস্তানের পয়েন্ট ৮। গ্রুপ ২-এ আর একটি মাত্র দল নিউজিল্যান্ড অথবা আফগানিস্তানের তাদের সমান ৮ পয়েন্টের অর্জনের সুযোগ আছে। যেহেতু শীর্ষ দুই দল উঠবে সেমিফাইনালে—এই সমীকরণে নামিবিয়ার বিপক্ষে জয় পাকিস্তানকে এনে দিয়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শেষ চারের টিকিটও। এ নিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ২০০৯ সালের চ্যাম্পিয়নরা শেষ চারে জায়গা করে নিল পঞ্চমবার। সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটের বৈশ্বিক মঞ্চে অন্য কোনো দলের নেই অমন বর্ণিল কৃতিত্ব।
আবুধাবিতে টস জিতে ব্যাটিং নেয় পাকিস্তান। এর আগে জেতা তিন ম্যাচেই পরে ব্যাটিং করেছিলেন বাবর আজমরা। দুবাইয়ে নামিবিয়ার বিপক্ষে ভিন্ন কিছুই চেয়েছেন তাঁরা। যদিও নামিবিয়ার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে প্রথম ১০ ওভারে তেমন রানই তুলতে পারেনি পাকিস্তান, পরের ১০ ওভারে সেটি পুষিয়ে নিয়েই ২ উইকেটে ১৮৯ রানের বড় সংগ্রহ তাদের। এই রানপাহাড় টপকাতে হলে বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে গড়তে হতো ইনিংসের ইমারত। ডেভিড ওয়াইজ-ক্রেইগ উইলিয়ামসরা খানিকটা ঝড়ও তুলেছিলেন, কিন্তু আস্কিং রান রেটের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অতটা পথ পাড়ি দেওয়ার মতো ব্যাটিং করতে পারেননি কেউ-ই! নামিবিয়ারও স্কোরও তাই থেমে গেছে জয় থেকে ৪৫ রান দূরে থাকতে।
স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করা রুবেন ট্রাম্পলমানের প্রথম ওভারে কোনো রানই নিতে পারেননি মোহাম্মদ রিজওয়ান। ডেভিড ওয়াইজের পরের ওভারে আসে ৪ রান। ট্রম্পালমান নিজের দ্বিতীয় ওভারেও অস্বস্তিতে রাখেন বাবর, রিজওয়ানকে। ম্যাচের চতুর্থ ওভারে ওয়াইজের বলে প্রথম বাউন্ডারি পান বাবর। পরের ওভারে আসে ৬ রান। তবে চতুর্থ বলে জোনাথন স্মিট রিজওয়ানকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন প্রায়, এলবিডাব্লিউয়ের আবেদনে আম্পায়ার আঙুলও তুলেছিলেন, রিভিউতে জেতেন রিজওয়ান। ইয়ান ফ্রাইলিংকের বিপক্ষে চড়াও হতে চেয়েও পারেননি বাবররা। ৬ ওভার শেষে পাকিস্তানের রান তাই, ২৯। ট্রাম্পলমান, ওয়াইজের পর চাপটা ধরে রাখেন স্মিট, ফ্রাইলিংক, বেন শিকোঙ্গো ও নিকোল লফটি-ইটোনও। কোনো উইকেট না হারালেও ১০ ওভারে পাকিস্তানের রান তাই ৬০-এর মধ্যেই, ৫৯।
ইনিংসের প্রথম ছয় আসে ১২তম ওভারে। ট্রাম্পলমানের তৃতীয় ওভারে প্রথম বলই বাবর উড়িয়ে নিয়ে ফেলেন বাউন্ডারির বাইরে। চতুর্থ ও ষষ্ঠ বলে আরো দুটি চার। এই ওভারেই ১৮ তুলে রান রেটটা বাড়িয়ে নেয় পাকিস্তান। লফটি ইটোনের পরের ওভারেও আসে ১২ রান। পাকিস্তানের সংগ্রহ তাতে ১০০ পেরিয়ে যায়। অর্ধশতক পেরিয়ে যান বাবর আজমও। যেভাবে খেলছিলেন তাতে বিশ্বকাপে আরেকটি সেঞ্চুরির সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ম্যাচের ১৫তম ওভারে ওয়াইজের বলে ক্যাচ দিয়ে ৭০ রানে ফিরে যান বাবর। দলীয় রান তখন ১১৩। বড় সংগ্রহের জন্য ওয়ানডাউনে নামা ফখর জামানকেও তখন হাত খুলে খেলতে হতো, কিন্তু ফখর সেট হওয়ার আগেই ফ্রাইলিংকের দারুণ এক বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ৫ রানে। মোহাম্মদ হাফিজকে নিয়ে এরপর রিজওয়ান রান বাড়ানোর দায়িত্বটা নেন। শেষ পর্যন্ত ৭৯ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। হাফিজের ১৬ বলে অপরাজিত ৩২। পাকিস্তানের সংগ্রহও তাতে ফুলেফেঁপে হয়েছে ২০০ ছুঁই ছুঁই। এরপর ডেভিড ওয়াইজের ৩১ বলে ৪৩* রানের ঝড়ের আগে ক্রেইগ উইলিয়ামসনের ৪০ এবং স্টেফান বার্ডের ২৯ রানের ইনিংসগুলোয় ১৪৪ পর্যন্ত যেতে পেরেছে নামিবিয়া।