জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষ্যে মহাবিজয়ের মহানায়ক প্রতিপাদ্যে আয়োজিত দুই-দিন ব্যাপী রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানমালার দ্বিতীয় দিনে পরিবেশিত হয়েছে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পর্ব। জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজিত এ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে উপভোগ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় তার পাশে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।
‘মহাবিজয়ের মহানায়ক’ অনুষ্ঠানটি বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় শুরু হয়। এদিন জাতির জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে অস্প্রদায়িক চেতনায় সোনার বাংলা গড়ার শপথ পাঠ করান। অনুষ্ঠানে সম্মাননীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানা।
শুক্রবার দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূরের নেতৃত্বে এক ঝাঁক আবৃত্তিশিল্পী পরিবেশন করেন কবিতাকোলাজ। পরিবেশনায় কাব্যিক কথামালায় উঠে আসে বঙ্গবন্ধুর জীবন সংগ্রাম ও দেশের পরিচয়। এরপর জুলফিকার রাসেল রচিত থিম সং ‘পদ্মা মেঘনা বুকে নিয়ে একটাই আছে দেশ/ আমার বাংলাদেশ’ গানের সঙ্গে পরিবেশিত হয় নৃত্যাঞ্চলের নৃত্য। শিবলী মোহাম্মদ ও শামীম আরা নিপার নেতৃত্বে শতাধিক নৃত্যশিল্পী অংশ নেন হৃদয়গ্রাহী এক পরিবেশনায়। ঐতিহ্যবাহী গম্ভীরা ও পুঁথির মাধ্যমে বর্ণনা করা হয় দেশকে এগিয়ে নেওয়ার সংগ্রামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নানা অর্জনের কথা। এরপর পরিবেশিত হয় সঙ্গীতকোলাজ। রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুলসঙ্গীতসহ ঐতিহ্যবাহী লোকগান পরিবেশন করেন দেশসেরা শিল্পীরা। ঐতিহাসিক ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ এর বাংলাদেশ গানটিও পরিবেশন করা হয় সম্মিলিত কণ্ঠে।

ইমন চৌধুরীর রচনা ও তারিক আনাম খানের পরিচালনায় দেশের সমৃদ্ধির কথা তুলে ধরা হয়। পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, কর্নফুলী টানেল নির্মাণের কথা কোরিওগ্রাফির মাধ্যমে তুলে ধরা হয়।
সৈয়দ আবদুল হাদী, রেজোয়ানা চৌধুরী বন্যা, নকিব খান প্রমুখ শিল্পীর নেতৃত্বে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ৮৫জন শিশুশিল্পী অংশ নেন একটি হৃদয়স্পর্শী সঙ্গীতকোলাজে। ‘আনন্দলোকে মঙ্গল আলোকে’, ‘আমাদের দেশটা স্বপ্নপুরি’ গান দিয়ে শুরু হয়ে পরিবেশনা শেষ হয় ‘আজ যে শিশু পৃথিবীর আলোয় এসেছে, আমরা তার তরে একটি সাজানো বাগান চাই’ গান দিয়ে। নাট্যকার মাসুম রেজা রচিত পুঁথিগানের মাধ্যমে অনুষ্ঠান উপস্থাপন করেন নাট্যশিল্পী মাসুম আজিজ।
এদিকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলাকালে জাতীয় সংসদের মূল ভবনে লেজার শো’র মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরর রহমানের বিভিন্ন সময়ের ছবি প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ কয়েকটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এবং অনলাইন মাধ্যমে সরাসরি প্রচার করা হয়।
বর্ণিল কোরিওগ্রাফির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত ‘মহাবিজয়ের মহানায়ক শেখ মুজিবুর রহমান’ গানটি পরিবেশনার মাধ্যমে রাত ৮টায় শেষ হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানমালা শেষ হয়। তবে আগামী ২৬ মার্চ শেষ হবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানমালা।